Saturday, June 6, 2009

কলেজ ফাঁকি দিয়ে সংসদ ভবনে কিছুক্ষন ....

কলেজ ফাঁকি দিয়ে সংসদ ভবনে কিছুক্ষন ....

১৩ ই মে, ২০০৯ বিকাল ৫:৫০





তখন কলেজে উঠেছি, পাংখা গজাইতে শুরু করছে মাত্র ... পড়ালেখা তো দুরের কথা, কলেজের ক্লাসগুলো যেন বন্ধ কারাগার বলেই মনে হতো ... ম্যাডামরা যথেষ্ট আদর করলেও উনাদের দিকে তাকানোর টাইম নাই তখন ... স্যার গুলো ও আপাতত আমাদেরকে ঘাটায় না,তাই আমরাও তাদের সাথে কোন পাঙ্গা নেই না, শুধু সোজা একটা হিসাব আমাদেরকে তারা ক্লাস শুরুর সময় বলে দিসে ... ক্লাস ফাকি দেয়া চলবে না, অনুপস্হিত থাকলে কঠিনরকম ফাইন দিতে হবে ... তবে বাপের ট্যাকা বেশী থাকলে ফাইন দিও ... আর পরীক্ষায় খারাপ করলে টি সি দিয়া কলেজ থেকে ভাগায়া দিবে ... কাহিনী শেষ।

এই শুনে তো যাও একটু ক্লাস করার ইচ্ছা ছিল তাও শেষ হয়ে গেছিলো, কি আর করা ... রেগুলার ক্লাস ফাকি দিয়ে ছাদে অথবা কলেজের ওপাশের কোন ধোয়া উৎসব পালন করা হতো .... ক্লাসে রেগুলার কোন একজন বাকিদের প্রক্সি দেয়া আর কোনোভাবে মিস হয়ে গেলে সুজোগ মতো প্রফেসর রুমে গিয়ে আমাদের গ্রুপের পোলাপানের হাজিরা দেয়া একরকমের চোর-পুলিশ খেলা বেশ ভালভাবেই চলছিল ...

একদিন আমাদের গ্রুপের পোলাপাইন সব দেখি এই রুটিনে টায়ার্ড হয়ে গেছে বলে বোরড হয়ে সবাই ক্লাসে বসে আছে, কেউ একজনে বললো -- চল আজকে সংসদ ভবনে যাই ... ব্যাস আর কৈ যাবা ... বাথরুমের নাম করে একে একে পোলাপাইন বের হতে লাগলো বাইরে আর সবচেয়ে পিছনের জানালা দিয়ে একে একে সবার ব্যাগ বাইরে রপ্তানী করা হলো .... পিছনের দেয়াল টপকে বাইরে বের হতেই দেখি কয়েকজন স্হানীয় রিক্সাওয়ালা হাসতে হাসতে আসকাইলো -- মামারা আজকে এত দেরী করে বের হলেন যে ?
আমরা বললাম -- ম্যুড তৈরী হতে লেট হইছে আজকে ....

উনাদের একজন বললো -- তাইলে মামা চলেন আপনাগো ঘুরায়া আনি ...
আমরা বললাম -- নাহ , সবতে মিলে আজেক সংসদ ভবন যামু ....

এর পরে এক রিক্সায় ৪ জন করে বসে একরকম রিক্সা মিছিল নিয়েই দুপুরের কড়া রোদের মধ্যে সংসদ ভবনে পৌঁছালাম ... গিয়া দেখি পুরা এলাকা খালি ... কিছু কিছু দোকলা এক একটি গাছের ছায়া দখল করে নিজেদের মধ্যে ফুসুর ফুসুর ঘুটুর মুটুর করে যাচ্ছে ... কয়েকজন চা - মামা / ভাইগ্না ফ্লাক্স হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ... আর বেশ অল্প মানুষজন হেটে বেড়াচ্ছে ... কিছু ইউনিফর্ম পরা ছেলেমেয়েদেরকেও দেখা গেল ... চটপটি মামা একমুখ হাসি দিয়ে কইলো --- মামা আজকে এখন আইলেন যে, আইজকা সন্ধ্যার আইবেন না ?
কইলাম -- কলেজের থেকে আইছি মামা, সন্ধ্যায় আসব কিনা ঠিক নাই ...

এদিক ওদিক তাকায়া সুবিধামত কোন ছায়ার জায়গা না পেয়ে ত্যাক্ত হয়ে যে এখানে আসার বুদ্ধি দিয়েছিল তাকে কঠিন কথা শুনানো শুরু করেছি অমনি কৈথ্থেকে দুই পোলা আইসা কয় --- ভাইয়া একটু এই দিকে আসবেন ?
আমি কইলাম --- ক্যান ?
ওরা কইলো --- আমাদের এক বান্ধবী আপনারে খুব পছন্দ করছে ... কিন্তু কাছে আইতে পারতেছে না ... আপনি একটু যাবেন ওর কাছে ?
আমি কইলাম --- ওরে এইখানে আইতে কও, আমি যামু না ....

ওরা আবার প্যাচড়াপ্যাচড়ি টাইপ ডায়লগ দিতাছে দেইখা কইলাম -- মিঞা কার লগে হাংকি পাংকি করো ... তোমাগো বান্ধবীরে এইখানে আইতে কও ...
এ কথা বইলা ওগোর একটারে আমগো কাছে রাইখা বাকিটারে পাঠাইলাম সেই কইন্যারে আননের জন্য .....

কিছুক্ষন পরে দেখি সত্যই ইউনিফর্ম পরা এক মাইয়া ঐ পোলার সাথে আইতাছে ... আমার সাথের এক দোস্ত (কলেজ লাইফের অল টাইম বাদরামী পার্টনার) কইলো --- শোন ওরে ঝাড়ি মারিস না , অন্যভাবে কিছু একটা করি চল ...
আমি কইলাম --- কি করবি ?
ও কইলো --- আসুক আগে এর পরে দেখা যাবে....

ঐ মেয়ে এসে দাড়াতেই আসকাইলাম --- তোমার নাম কি ?
সে বললো -- কঙ্কা
আমি বললাম --- ঘটনা কি ? তোমার ফ্রেন্ডরা আইসা কি কয় আমারে ? (একটু ফাপর নিয়া কইলাম) আমারে চিনো তুমি ?
সে হালকা থতমত খায়া কইলো -- ভাইয়া কিছু মনে করবেন না আমরা আপনার সাথে একটু ফান করতে চাইছিলাম .... প্লিজ ভাইয়া কিছু মনে করবেন না ...

আমার পার্টনার হাতের হালকা টোকা দিয়া বুঝাইলো সময় হইছে ওগোরে সাইজ করার ....

পার্টনার কইলো --- তুমগোরে কৈ জানি দেখছিলাম .... নিউমার্কেটে প্রিন্স মাহমুদের এ্যালবাম (নাম টা ভুলে গেছি, তখন হটকেকের মত চলতেছিল ঐটা) কিনতে গেছিলা তাই না ?
সবকয়টা একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে কইলো --- জ্বি, আমরা কয়দিন আগে গেছিলাম ক্যাসেট কিনতে ...
আমি কইলাম --- ঐখানে কি ঘটনা ঘটাইছিলা মনে আছে কিছু ?
ওরা কয় --- না ... মানে ... ওখানে তেমন কিছু হয়নি তো ...

ওদের মুখ দেখে বুঝতে পারছি, কিছু না হলেও মোটামুটি ভাল মাইনক্যাচিপায় পড়ছে আল্লার বান্দা গুলো ...

আমি পার্টনার রে কইলাম --- দোস্ত, ফার্মগেট থেকে আমগো কালা পাহাড়টারে ডাইকা আনতো ... ওরে দেখলেই এগোর সবকিছু মনে পড়ে যাবে ....

বলতে না বলতে দেখি ছেলেগুলো কেমন কেমন করছে আর সেইসাথে কঙ্কা নামের মেয়ের অবস্হা আসলেই খারাপ হয়ে গেছে ...সে পাংশুমুখে বললো --- ভাইয়া আমরা আসলেই ওখানে কিছু করিনি ...
আমরাও তখন হেসে দিয়ে বললাম --- জানি তোমরা কিছু করোনি, তোমরা শুরুতে যেমন মজা করছিলে , আমরা ও একটু দুস্টুমি করলাম ...

নিজেদের মাঝের দুস্টুমিগুলো একে অপরদের কাছে শেয়ার করতে করতে সবাই মিলে ঝাপিয়ে পড়লাম চটপটি আর ফুচকা ভক্ষন কর্মসূচীতে ...




আম্মুর চড়ের শব্দে একজন নির্বাক :| আরেকজনের ১০০ মিটার দৌড় B-)


আম্মুর চড়ের শব্দে একজন নির্বাক :| আরেকজনের ১০০ মিটার দৌড় B-)

১২ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:১৯





আজকাল কেন জানি আম্মুর সাথে ঘটে যাওয়া পুরোনো স্মৃতিগুলো বার বার ঘুরেফিরে সামনে আসছে একের পর এক ... এমনই একটা অঘটন ভরা ঘটনা ছিল এই রকম -------

কোন এক ছুটির দিন দুপুর বেলার ঘটনা ... তখন (খুব সম্ভব) ক্লাস ৩ তে পড়তাম ... এমনিতেই ছোটবেলা থেকে কম ঘুমাই ... এ জন্য সেদিন আম্মু আমাকে তার সাথে জোর করে শুইয়ে ঘুম পাড়াতে গিয়ে একসময় ক্লান্ত হয়ে নিজেই ঘুমিয়ে পড়লেন ..... কিছুক্ষন পরে আম্মুর নড়াচড়া নেই দেখে আমিও চুপচাপ ঘটনা পর্যবেক্ষন করে আস্তে আস্তে নেমে পড়লাম বেড থেকে ... পা টিপে টিপে ঘরের বাইরে গিয়ে ভাবলাম আম্মু ঘুমিয়ে আছে এই সুজোগে আপুনির সাথে খেলা করলে মন্দ হয় না ... এবার ওর ঘরে গিয়ে দেখি সে ও ঘুমে একেবারে পানি হয়ে আছে ... কি করা যায় ভাবতে ভাবতে বারান্দার গ্রিল ধরে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকলাম ... ৩ তলার উপরে থাকতাম বলে আমার খেলাধুলা মোটামুটি ঘরের ভিতরেই সীমাবদ্ধ থাকতো ... বিকেলে সবাই মিলে যেতাম ছাদে ... এছাড়া ছাদে যাওয়া আমার জন্য নিষেধ ছিল ... প্রথমে ভাবলাম একলা একলা ঘরে ফুটবল খেলি , কিন্তু একদিকে ঘুমিয়ে থাকা আম্মু জেগে গেলে বকা দিতে পারে অন্যদিকে আমাদের বাড়ীওয়ালা (২য় তলায় থাকতেন) আবার হাই প্রেশারের রোগী ছিলেন, উনি চিল্লালে তো বাসায় আগুন ধরে যাবে ... এ জন্য চুপচাপ কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকলাম আকাশের দিকে তাকিয়ে .... কি করি কি করি করতে করতে একসময় চোখ পড়লো আব্বুর সাইকেলের উপরে ... এই সেই সাইকেল যেটা তখন আব্বু ব্যবহার করতেন না কিন্তু ঘরে এনে রেখে দিয়েছিলেন ... একসময় এইটাতে চড়ে আমি আব্বুর সাথে সারা শহরে ঘুরে বেড়াতাম ... অনেকটা আনমনেই গ্রিলের সাথে হেলান দেয়া সাইকেলের উপরে চড়ে বসতেই নিজের মাঝে কেমন আব্বু আব্বু ভাব এসে গেল .... পা ঝুলিয়ে চেষ্টা করলাম প্যাডেলে ছুতে , কিন্তু না পেয়ে হাতের কাছে পেলাম সাইকেলের বেল .... আর কৈ যাবে ... শুরু হলো ক্রিং ক্রিং ক্রিং ....

একটু পরে ঐ শব্দে আম্মুর ঘুম ভেঙ্গে গেলে আম্মু বেডরুম থেকেই বলে উঠলেন -- এ্যাই অনন্ত সাইকেলের বেল বাজায়ো না ...

আম্মুর কথা একবারে আমার কখনোই শুনতে ইচ্ছা হয় না (এখনো) বলেই সেবার কোনো উত্তর না দিয়ে আমি আমার মত বেল বাজাচ্ছিলাম, ক্রিং ক্রিং ক্রিং ...

আম্মু আবার বললেন --- এই অনন্ত শব্দ কোরো না ....
আমি আবারো উত্তর না দিয়ে আম্মুর রাগ আরো বাড়ানোর জন্য মনের খুশিতে আরো জোরে জোরে আর যত দ্রুত সম্ভব ক্রিং ক্রিং ক্রিং বাজিয়ে চললাম ...

এবার আম্মু সত্যি ভীষন রেগে বলে উঠলেন --- অনন্ত শব্দ বন্ধ না করলে কিন্তু মাইর দিবো

কথাটা তখন আমার এমন মজা লেগেছিল যে আম্মুর গলা নকল করে বার বার বলতে লাগলাম --- অনন্ত শব্দ বন্ধ না করলে কিন্তু মাইর দিবো .... অনন্ত শব্দ বন্ধ না করলে কিন্তু মাইর দিবো .... অনন্ত শব্দ বন্ধ না করলে কিন্তু মাইর দিবো

এর মধ্যে আপুনির ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল, ও এসে দাড়িয়েছে আমার পাশে ... হঠাৎ দেখি আম্মু গটমট করে হেটে আসছেন আমাদের দিকে ... বুঝলাম আজকে আমার মাইর আছে কপালে ... সুতরাং পালাবার জন্য আমি অন্য বারান্দার সাইডে আস্তে করে সরে যেতে থাকলাম .... ওদিকে আম্মু চরম রাগে আমাদের কাছে আসতেই আপুনির গালে বসিয়ে দিলো এক রাম-থাপ্পড় .... আর রাগী রাগী গলায় বললেন --- আমার গলা নকল করে ভেঙচি দিচ্ছিলা কেন ? X(

আমার আপুনিটা চড় খাওয়া গালে হাত দিয়ে বুঝতে চেষ্টা করলো ঘটনা কি হইছে :|

আর ততক্ষনে আমি দাত কেলিয়ে :P ১০০ মিটার দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হতে দৌড় শুরু করতেই আম্মু একটু থতমত করে আপুনিকে জিজ্ঞেস করলেন -- কিরে , ঐ বান্দর এমন করে হেসে দৌড় দিলো কেন ?

অতঃপর ......

সাদা পান্জাবীতে রহস্যময় লিপস্টিক চিহ্ন

সাদা পান্জাবীতে

রহস্যময় লিপস্টিক চিহ্ন

১১ ই মে, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪১





আজকে আম্মুর সাথে ফোনে এটা সেটা নিয়ে কথা বলছিলাম, এমন সময় হঠাৎ আম্মু জিজ্ঞেস করলো - সামনের ঈদে কি পান্জাবী পরবা ? ... আমি বললাম - এখানে যে শীত তাতে করে পান্জাবী পরে ঈদ করা সম্ভব না , আর অনেক দিন না পরার কারনে এখন কেমন জানি পরার ইচ্ছাটাও হারিয়ে গেছে ... আম্মু বললেন - যদি ইচ্ছা হয় তাহলে বলো, একটা পাঠিয়ে দিবো ... আমি বললাম -- আচ্ছা ... আবার আম্মু বললেন -- কি রং এর চাও সেটাও জানিয়ে দিও ....... এইবার পড়া গেল মহা ফ্যাসাদে ...যখন ছোট ছিলাম তখন পরতাম রং বেরং এর পান্জাবী, একটু বড় হয়ে পরতাম শুধু সাদা, আবার কখনো কখনো শখ করে অন্য রং এর পান্জাবীও পরেছি, কিন্তু এখন তো মাথায় ই আসছে না কি রং এর কথা বলি ... ঘুরে ফিরে মাথায় খালি সাদা রংটির নাম ই আসছে ... সেই সাথে কতশত স্মৃতি .... এর মাঝে একটি ছিল একটু অন্যরকম :| .....

একবার এক খুব কাছের বন্ধুর বড় ভাই বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম সেদিন .... আমরা সবাই একসাথে বিয়ে বাড়ি পৌছে দেখি বিশাল আয়োজন, চরম এলাহী কান্ড ... গেটে পৌছে যথারীতি দেখি উনার শালা শালীরা সব গেট ধরে দাড়িয়ে আছে .... টাকা না দিলে নাকি গেট ছাড়বে না .... আমরা গেট মানি হিসেবে ২৫,০০০ এর মতো ধরে রেখেছিলাম... প্রথমে ওরা ডিমান্ড করছিল ২০,০০০ না দিলে কোন মতেই ছাড়বে না ... আমাদের আইডিয়া থেকে ওদের ডিমান্ড কম দেখে আরো কমানোর জন্য আমার বন্ধুরা সবাই চাপাচাপি শুরু করলো কত কম টাকা দিলে গেট ছাড়বে ..... একসময় সেটা কমতে কমতে ১০,০০০ এ নামলেও আমাদের ফ্রেন্ডরা আরো কমানোর জন্য চাপাচাপি করছিল ...

বেশ খানিক্ষন এমনে চলতে থাকলে, এক পর্যায়ে আমি ওদেরকে জিজ্ঞেস করলাম --- টাকা দিলে আপনারা কি করবেন ?
উত্তর এলো -- আমরা এই কেঁচি জামাই বাবুর হাতে দিবো এর পরে উনি ফিতা কেটে ভিতরে ঢুকবেন,
আমি বললাম --- কেঁচি দিয়ে ফিতা কাটলেই সব ঝামেলা শেষ তো ?
ওরা বললো --- হ্যা ... এর পরেই আপনাদেরকে আমরা ভিতরে ঢুকতে দিবো, এর আগে না ...

আমি এক হাতে টাকা নিয়ে আরেক হাত পকেটে ঢুকায়ে , আগে থেকে পকেটে রাখা একটা কেঁচি বের করে বললাম বড় ভাইয়াকে বললাম --- নেন ভাইয়া, ঝামেলা শেষ করেন, ফিতা কাটেন তো ....
অমনি শুরু হলো হট্টগোল --- না না না .... জামাইকে ঐ কেঁচি দিয়ে ফিতা কাটতে দেয়া হবে না ....
আমি বললাম -- আচ্ছা ঠিকাছে, জামাই এর পক্ষ থেকে আমি কেটে দিচ্ছি ....

এটা বলেই আর দেরি না করে হাতে ধরা কেঁচি দিয়ে দিলাম ঘ্যাচ করে ফিতা কেটে .... ব্যাস আর কৈ যায় ... রিতিমত কুরুক্ষেত্রের মত অবস্হা তৈরী হয়ে গেল .... ওদিকের ভিতরে থাকা মুরুব্বিরা এত দেরী আর হট্টগোল শুনে এসে দেখে এই কান্ড, উনারা হাসতে হাসতে আমাদের ভিতরে নিয়ে গেলেন, আর আমরা ভাইয়ার শালা শালীদের অগ্নি দৃষ্টির উপরে ভেংচি কেটে বীর দর্পে ঢুকে পড়লাম বিয়ে বাড়ীতে ...একদিকে এই কান্ড তার উপরে বরের ছোটভাই এর ক্লোজ ফ্রেন্ড হিসেবে আমি সবটুকু সময় বেশ সমাদর আর নিরাপত্তা দুটোই পেয়েছিলাম ও বাড়ীর মুরুব্বিদের কাছে ...

যাই হোক, রাতের খাবার দাবারের পর আমরা আবার একটু ধোয়া উৎসব করার জন্য ওই বাড়ীর ছাদে উঠে একটু অন্ধকার কোনে গিয়ে বন্ধুরা সবাই একসাথে মশাল জ্বালিয়ে নিজেদেরকে গরম করে নিচ্ছি ... এমন সময় দেখি আমাদের চারপাশে বড়ভাই (জামাই) এর কয়েকজন শালা শালীর হাজির হয়েছে ...সামনে পিছনে সব জায়গাতেই ওরা আর আমরা মাত্র কয়েকজন .... এদের সাথেই সেই সময় ঝামেলা করার কারনে বাটে পেয়ে কিছু করে কিনা চিন্তা করছি, এমন সময় দেখি তারা চরম ভাল ব্যবহার করছে , হাসি মুখে মজার মজার কথা বলছে , আনন্দ করছে ..... ব্যাপারটা কেমন জানি খটকা লাগতেই সেখান থেকে কেটে পড়লাম আবার আলো ঝলমল স্টেজের দিকে ... এরপর থেকে ওখান থেকে ফেরা পর্যন্ত অনেকেই দেখি আমার দিকে তাকায়ে কেমন একটা মুচকি হাসি দিচ্ছে ... ঘটনা কিছু না বুঝেই এক দোস্তরে আসকাইলাম ঘটনা কি রে ? .... হারামজাদা নিজেও মুচকি হেসে বলে কিছু না দোস্ত, এভরিথিং ইজ ওকে ....


আসল ঘটনা বুঝতে পারলাম পরের দিন যখন আম্মু আমার রুম থেকে পান্জাবী নিয়ে যাচ্ছিলেন ধোয়ার জন্য ... ঘর থেকে বেরোনোর সময় হঠাৎ উনি জিজ্ঞেস করলেন --- কিরে পান্জাবীর পিছনে এত গুলো লম্বা লম্বা চুল ক্যান ?

আমি বললাম -- কৈ ?

আম্মু বললো -- এই যে এত্তোগুলো ...

আমি আরো ম্যুডের সাথে বললাম -- নিজের চুল সব মাথা থেকে ঝরে আমার পান্জাবীতে ফেলে এখন আমাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে এগুলো কার চুল ?

আম্মু খানিক্ষন পরে পান্জাবীটার পিছনের সাইড উঁচু করে ধরে বললেন --- তাইলে কি এই লিপস্টিকের দাগ গুলোও আমি দিসি নাকি ? X(

:| :| :|