Wednesday, September 19, 2012

মনের কথা বুঝতে পারলে কেমন হত ?

 


মনের কথা এমন এক জিনিস যা সহজে বোঝা যায় না। কত শত সমস্যা আমাদের সামনে হাজির হয় শুধুমাত্র অন্যের মনের কথা না বোঝার কারনে .. মনের কথা বুঝতে পারা ও যে খুব একটা সুখকর হবে তাও মনে হয় ঠিক না।

কেমন হবে যদি একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখা গেল.. সামনের সবার মনের কথা বোঝা যাচ্ছে ?

চিত্রটা হয়ত এমন হতে পারে --- >>

ঘুম থেকে ছোট বোন জাগিয়ে দিল এই বলে যে -- ভাইয়া ওঠো, অনেক বেলা হয়েছে (মনে মনে -- আমার ভাই কেমন করে কুম্ভকর্ন হয়েছে কে জানে, প্রতিদিন তাকে সকাল সকাল জাগাতে মেজাজটাই খারাপ হয়ে যায়)

মা ডাকছেন নাশতা খেতে -- >> জলদি আয় খেয়ে নে, নাশতা ঠান্ডা হয়ে গেল যে ( মনে মনে -- বাপ বেটা ২টা তো আমার জীবনটা জালিয়ে খেলো..... একটা কাজ যদি ঠিকমত করতে পারতো .....।)

বাবা -- >> (মনে মনে -- এ তো দেখি আমার চেয়ে নিকাম্মা হবে, আল্লাই জানে এই ছেলে বৌ এর হাতে প্রতিদিন ..... নাহ থাক ! এমন অলুক্ষনে কথা চিন্তা করবো না )

কোন রকমে নাশতা খেয়ে রাস্তায় বের হতেই রাস্তার ওপারে বসে হাপাতে থাকা কুকুরের মনের কথা শুনে চমকে ও যেতে পারেন...... (কুকুর মনে মনে বলছে -- উফ: কোন দু:খে যে দারোগা বাড়ীর পাপ্পীটাকে দেখটে গিয়েছিলাম, না হলে তো জান বাচানোর জন্য এমন দৌড় দিতে হত না ।)

রাস্তার যানজটের কারনে ২ ঘন্টা দেরিতে ডেটিং স্পটে পৌছানোর পরে জান এর অভিমান শুরু হল -- >> হাতে ঘড়ি দিয়েছ কেন যদি সময়মত পৌছাতে না পার ? (মনে মনে --- উফ : আজকে বড্ডো বেচে গিয়েছি, আমিই তো আসলাম ৫ মিনিট আগে)

তোমার হাত ঘড়ি দাও আমি নিজের হাতে ভেংগে ফেলবো (মনে মনে - ইশ: এত শখ করে কিনে দেয়া ঘড়ি নিজের হাতে ভাংবো আমার কি মাথা খারাপ? পাগলটা আবার না ঘড়িটা খুলে দেয় ভাংতে ,তাহলে তো আমিই বিপদে পড়ে যাব )

কি, মুখ দিয়ে কোন কথা বের হয়না কেন?... যাও তোমার সাথে আমি কথা বলবনা... (মনে মনে -- ও আল্লাহ !! আজকে অনেক বকা দিচ্ছি আমার জানটা কে, প্লিজ ও যেন কথা বন্ধ না করে.... তাহলে যে আমি কানতে কানতে শেষ হয়ে যাব)

তোমার মত অসভ্যের সাথে আমি কোন সম্পর্ক রাখব না (মনে মনে - একটু হাত ধরে মিষ্টি করে সরি বল্লেই তো আমি ঠিক হয়ে যাব .... একটু আদর পাব বলে এত কিছু করছি ... বোকাটা বুঝতে পারছেনা কেন ?)




০২ রা জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৮


বসে আছি সেই প্রতীক্ষায় .....

 


দু চোখ মেলে তাকাই
ঐ নীল দিগন্ত পানে 
এক টুকরো মেঘের প্রতীক্ষায়....

হয়তো আসবে সে দিন
ফুরাবে প্রতীক্ষার প্রহর
মিলন হবে এক দল মেঘদূতের সাথে...

চারিদিকে তীব্র আলোকের ছড়াছড়ি
সেই সাথে দেখি ধূ ধূ বালু চর
অনন্ত অসীম অনাকাংক্ষীত সত্য...

অবসন্ন মনে বসে থাকা
অপ্রত্যাশিত সত্য নিয়ে 
কাল্পনিক ভবিষ্যতের আশায় ...

কবে পাব সেই মেঘ দূতের দেখা ?
কবে দেখব ধূ ধূ বালুচরে বসন্তের হাজার রং এর খেলা ?
কবে হবে এক পশলা বৃষ্টি ...... আমার জীবনে .....

বসে আছি সেই প্রতীক্ষায় ........


০১ লা জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:০২




মিষ্টি মুখের হাসি ......







আজকে অনেক সকালে ঘুম থেকে জেগেছি। কাল রাতে ঠিকমত ঘুম হয়নি। মনটা একটু খারাপই ছিল। আসলে একটু না বেশখানিকটা খারাপ ছিল.... যাই হোক ..... সকালে দেখি ঘরে নাস্তা করার মত কিছুই নাই, আসলে যা ছিল তা খেতে ইচ্ছা করছিল না। চলে গেলাম সোজা বেকারীতে .... সেখানে গিয়ে দেখি বিশাল লাইন....এতই লম্বা যে বেকারীর ভিতর থেকে লাইন শুরু হয়ে রাস্তার উপরে এসে পড়েছে.... 

অন্য কোথাও যেতে হলে বেশখানিকটা দুরে যেতে হবে... তার জন্য আবার বাসায় গিয়ে গাড়ীর চাবি নিতে হবে, ড্রাইভ করে যেতে হবে, তারপর ও সেখানে এরকম লম্বা লাইন দেখলে আমার কি অবস্হা হবে চিন্তা করতেই মনের সাথে এইবার মেজাজটাও বিগড়াতে শুরু করলো... 

হঠাৎ আমার চিন্তায় বাধা পড়ল যখন দেখলাম আমার পিছনে এক মহিলা বুগিতে (বাচ্চাদের জন্য যে গাড়ি ব্যাবহার করা হয়) করে তার ছোট্ট একটা ফুটফুটে বাচ্চা নিয়ে দাড়িয়েছে। গুড মর্নিং বলতেই তিনি সুন্দর একটি হাসি উপহার দিয়ে প্রতিউত্তর দিলেন। তারপরই মনযোগ দিলেন তার বাচ্চার দিকে.... কি সুন্দর বাচ্চা, দেখলেই মনটা ভাল হয়ে যায় এমন আদুরে , গুল্লু গুল্লু চেহারা, ...... 

এইবার সত্যই আমার মনটা ভাল হওয়ার পরিবর্তে খারাপ হতে শুরু করল...... কারন বাবা মায়ের একমাএ আদরের ছেলে যে তাদেরকে ছেড়ে থাকবে তা কখনো চিন্তাও করতো না... তাকে আজ এত দুর একলা..... নাহ এ নিয়ে চিন্তা করলে আজকের দিনটাই খারাপ যাবে.... তাই নিজের চিন্তার ঘুড়িকে আর উড়তে না দিয়ে, টেনে নামানোর কাজ শুরু করে দিতেই আবারও চোখ পড়ল অনিন্দ্য সুন্দর সেই মুখটির উপর।খুব ইচ্ছা হল তাকে একটু আদর করতে.... 

মায়ের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে কিছুক্ষন তার দিকে হাত আর চোখ মুখ আকাবাকা করে ফোকলা মুখে হাসির ফোয়ারা দেখতেই ইচ্ছা হল আরেকটু বেশি হাসি না দেখলে আমার চলবেনা...... যে ভাবা সেই কাজ..... সকালের নাস্তা কেনার কথা ভুলে গিয়ে শুরু করে দিলাম সেই অতি পরিচিত খেলা .....হাতের তালুতে -- দুধ দেই, ভাত দেই, কলা দেই, চিনি দেই , এবার সবটুকু সুন্দর করে মেখে নিয়ে তুমি একটু খাও, আমি একটু খাই, ...... এবার রাজার বাড়ীর বিড়াল এসে চুপি চুপি সব খেয়ে ফেললো তারপর ও তার খিদে মিটলোনা ..... সে আরও খাবার খুজতে শুরু করলো.... মিয়াঁও মিয়াঁও মিয়াঁও মিয়াঁও ........এইভাবে আমি বাচ্চাটার হাতে কাতুকুতু দেওয়ার চেস্টা করতেই ..... ফোকলা বুড়োর মুখে যেন হাসির বন্যা শুরু হল.....

হঠাৎ খেয়াল হল আমার চারপাশে বেশ মানুষের ভীড় জমে গিয়েছে ..... সবার মুখে এক কথা.. বাহ, সুন্দর খেলা তো ..... আরেকবার খেলো প্লিজ..... এক সময় দেখি বেকারীর মালিক ও বিক্রি বন্ধ করে খেলা দেখছে....... 

আরও কিছুক্ষন খেলা করে একটা কিং সাইজের তুর্কি ব্রেড কিনে বাসার পথে রওনা হতেই খেয়াল হল আরে, আমার মনটা তো খুব ভাল লাগছে ( অনেক ধন্যবাদ সেই করুনাময়ী মা কে যিনি তার বাচ্চার সাথে আমাকে খেলতে অনুমতি দিয়েছেন ). .... যাক উইকএন্ড এর প্রথম দিনটা খুব সুন্দর ভাবে শুরু হল.... 

বাসায় এসে খেয়াল হল,নিজের অজান্তেই আমি এখনো হাসছি..... কারন এখনো আমার চোখের সামনে ভাসছে সেই মিস্টি মুখের দুস্টু হাসি .. হা হা হা হা....... হি হি হি .... এ এ এ হা হা হা .. উ উ উ হু হু হু ..... হাহ হা হা......



২৮ শে জুন, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৬