Tuesday, October 6, 2009

আত্মোপলব্ধীর পথ ধরে ছুটে চলা অন্তর্দ্বন্দ অতঃপর

আত্মোপলব্ধীর পথ ধরে

ছুটে চলা অন্তর্দ্বন্দ অতঃপর

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২০



অনেকে নাকি নিজের মনের সাথে কথা বলতে পারে, কৈ আমি তো কখনো এমনটা করিনি, জিনিসটা ভাবতে ভাবতেই কেন জানি মনে হলো জিনিস টা করলে খুব একটা খারাপ হবেনা মনে হয় ... সুতরাং চেষ্টা করেই দেখা যাক ....

আমি : মন তুই কৈ ?
কারো কোন সাড়া শব্দ নাই ... তাই আমি আবার তার সাথে কথা বলার জন্য নিজের সম্পূর্ন মনোযোগ দিতে চেষ্টা করলাম ... আর আবার জিজ্ঞেস করলাম

আমি : আমার ছায়া, আমার মন , কোথায় তুই ?
হঠাৎ মনে হলো কেউ যেন ভিতর থেকেই উত্তর দিলো ... তার অস্তিত্ব প্রকাশ করে যেন জানান দিলো, সে আছে ....

আমি : আমি এমন কেন রে ?
মন : কেমন ?
আমি : আমি সবার মাঝে থেকেও নিজেকে সবসময় আড়াল করে রাখি কেন ?
মন : কারন তুই সাধারন না ...
আমি : মানে ?
মন : মানে তুই সবার মত দেখতে হলেও আসলে তুই অন্যরকম এক জীব
আমি : তবে আমি এই জগতে কি করছি ?
মন : খুব সম্ভব ভুল করে চলে এসেছিস ...
আমি : ধুর , কি সব আবোল তাবোল কথা বলছিস
মন: আমি যা বলছি সেটাই ঠিক, তুই নিজেকে আর কনফিউজড করিস না ... সত্যকে মেনে নে ...

আমি : সত্য টা কি ?
মন : তুই মানুষরুপী এক অসামাজিক জীব ...
আমি : প্রমান কর ...
মন : তোর এই মুহুর্তে বন্ধু সংখ্যা কত ?
আমি : সে তো অনেক আছে
মন : নাহ ! ভাল করে ভেবে বল ... যাদের সাথে তোর যোগাযোগ আছে, বন্ধুর মত তাদের সাথে আছিস এই মুহুর্তে
আমি : হাতে গোনা অল্প কয়েকজন ... খুবই অল্প কয়েকজন
মন : তুই কতজনের সাথে নিয়মিত কথা বলিস ?
আমি : সে সংখ্যা তো এক আঙ্গুলের বেশী পার হবে না ...
মন : ফোনে কাজ ছাড়া গল্প করিস আগের মত ?
আমি : নাহ ! কাজ ছাড়া কারো ফোন ই এ্যাটেন্ড করি না , করলেও দু - তিন জনের
মন : গত এক - দুই বছরে বেড়াতে গিয়েছিস কোথাও ?
আমি : মনে পড়ে না
মন : রাতে ঘুমাস ?
আমি: নাহ
মন : আর কাউকে কেয়ার করিস ?
আমি : মনে হয় না ...
মন : কারো কষ্ট দুর করতে পারিস ?
আমি : নাহ !

মন : আগে যেমন পঙ্খীরাজ উড়ায়ে লং ড্রাইভে বের হতি আজকাল আর তা করিস ?
আমি : নাহ , শেষ কবে গেছি নিজেরই মনে নাই
মন : বই পড়িস ?
আমি : নাহ
মন : সামাজিক কোন আচার অনুষ্ঠানে যাস ?
আমি : নাহ
মন : এক বিল্ডিং এ তোরা যারা থাকিস ওদের সাথে শেষ কবে কথা বলেছিস ?
আমি : মনে নাই ... পিচ্চিদের সাথে দেখা হলে দিনে এক দুইটা কথা হয়, বড়দের কারো সাথে ঈদের দিন ছাড়া মনে হয় মাস খানেকের বেশী হবে কথা বলা হয়নি ...
মন : তোর সবচেয়ে প্রিয় যায়গা কোনটা ?
আমি : দরজা বন্ধ অবস্হায় আমার বেডরুম ... যেখানে আর কারো ঢুকার অনুমতি নেই
মন : আর বাইরের সবচেয়ে প্রিয় যায়গা ?
আমি : নির্জন কোন নদীর পাড়ে একলা বসে থাকতে
মন : তোর আশে পাশে কি তাহলে সমাজের ছিটে ফোটাও রাখতে দিয়েছিস ?
আমি : মনে হয় না
মন : নিজেকে কি সমাজের একটা অংশ হিসেবে রেখেছিস ?
আমি : মনে হয় না
মন : তাহলে তুই বল, তুই কি এই সমাজের কেউ ?
আমি : যথেষ্ট সন্দেহ আছে ...
মন : ঠিক বলেছিস, এবার কি বুঝেছিস তুই যে একটা অসামাজীক প্রানী

এবার সত্যি এই অসামাজিক প্রানীটা চিন্তায় পড়ে গেল ... নিজের ভিতরের কথাগুলোকে সে কি পারবে কখনো ইগনোর করতে ? তবে কি ওগুলোই সত্যি ? পারবে কি কখনো এই সমাজের সাথে মিশতে ? গড়তে পারবে নিজেকে অসামাজিক প্রানী থেকে সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ? ... হয়তো হ্যা , অথবা না ....




No comments: